বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কলস গ্রামে সাবেক প্রেমিকাকে জোরপূর্বক তুলে এনে ধর্ষণের অভিযোগে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে বিমানবন্দর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে টিকটকার মারিয়া আক্তার নামের এক তরুণী এখনও পলাতক রয়েছেন।
ভুক্তভোগী মরিয়ম আক্তার নিশী (২৬) অভিযোগ করে জানান, লাকুটিয়া এলাকার ফারুকুল ইসলামের ছেলে অন্তু (৩০) এর সঙ্গে তার অনলাইনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে কিছুদিন পর তিনি জানতে পারেন, অন্তু মাদকাসক্ত ও চরিত্রহীন। এরপর সম্পর্ক ছিন্ন করলে অন্তু বিভিন্নভাবে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
যোগাযোগে ব্যর্থ হয়ে অন্তু আলোচিত টিকটকার মারিয়া আক্তারকে ব্যবহার করে নিশীর সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ স্থাপন করে। পরে মারিয়া নিশীর সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করে এবং ৪ নভেম্বর ‘অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে’ উজিরপুরের তার বাড়ি থেকে নিশীকে বের করে আনে।
নিশী বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর অন্তু, মারিয়া ও অন্তুর বন্ধু হৃদয় মিলে তাকে জোরপূর্বক বরিশালের বিমানবন্দর থানার কাশিপুর ইউনিয়নের কলস গ্রামের রিদয়ের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে মারধর করে, জোর করে মাদক সেবন করিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়।
৫ নভেম্বর দুপুরে সুযোগ পেয়ে মরিয়ম আক্তার নিশী পালিয়ে বিমানবন্দর থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, “ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে (মামলা নং: ০৯/০৫ নভেম্বর ২৫)। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পুলিশ অন্তু ও হৃদয়কে গ্রেফতার করেছে, পলাতক মারিয়া আক্তারকে ধরতে অভিযান চলছে।”
ভিকটিমের এক আত্মীয় তুষার জানান, “অন্তুর আগেও বিয়ে হয়েছিল। স্ত্রী ও সন্তান থাকলেও বিচ্ছেদ হয়। সেই সুযোগে মাদকাসক্ত অন্তু নতুন করে নিশীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। নিশীর কাছে থাকা গোপন ভিডিও পুনরুদ্ধারের জন্যই পুরো অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনা সাজানো হয়।”
অপরদিকে হৃদয়ের মা জেসমিন বেগম দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না এবং তার ছেলে নির্দোষ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর ভিকটিমকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেলে পাঠানো হয়েছে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য। পাশাপাশি আসামিদের ডিএনএ পরীক্ষা করার প্রক্রিয়া চলছে।
ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,
> “আসামিদের কোনো প্রভাবশালী মহল দিয়ে ছাড়ানোর সুযোগ দেওয়া হবে না। ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং আদালতে আসামিদের চালান দেওয়া হবে।”