শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে মাদারীপুরের কালকিনিতে ঢাকা–বরিশাল মহাসড়কে গাছ ফেলে অবরোধ সৃষ্টি এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করেছে পুলিশ। রোববার (১৬ নভেম্বর) গভীর রাতে কালকিনি থানার এসআই আবু তালেব বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুক, কালকিনি পৌরসভার সাবেক মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদারসহ মোট ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্তদের মধ্যে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় কালকিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন হাওলাদারকে। তাকে নিজ বাড়ি উপজেলার পশ্চিম মিনাজদী এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোববার ভোরে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও কালকিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুকের নেতৃত্বে দলীয় নেতা-কর্মীরা গোপালপুর এলাকায় জড়ো হন। পরে তারা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছ ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। একই সময় শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণা হলে দক্ষিণাঞ্চল ‘অচল করে দেওয়ার’ ঘোষণা দেন তারা।
ফলে ঢাকা–বরিশাল মহাসড়কে চার ঘণ্টার বেশি সময় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকে। যাত্রী, ব্যবসায়ী, ছাত্রছাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
অবরোধের পর প্রায় চার ঘণ্টা পর উপজেলা বিএনপি–জামায়াতের নেতা-কর্মী, ফায়ার সার্ভিস সদস্য এবং হাইওয়ে থানা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে সড়কে ফেলা গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা জানান, গোপালপুর ব্রিজ এলাকায় “নিষিদ্ধ কার্যক্রম” পরিচালনার সময় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে সরকারবিরোধী স্লোগান দেয়। এ কারণে দীর্ঘ সময় সড়কে জনদুর্ভোগ তৈরি হয়।
তিনি আরও বলেন, “সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়েরের পর একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। খুব শিগগিরই সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
পুলিশ জানায়, বর্তমানে এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে যাতে পুনরায় কোনো ধরনের নাশকতা বা অবরোধ সৃষ্টি না হয়।