বরিশাল সদর-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়নকে ঘিরে দেখা দিয়েছে চরম বিভাজন। দলের জ্যেষ্ঠ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ারকে ঘিরে জেলা ও মহানগর বিএনপির মধ্যে চলছে তীব্র মতপার্থক্য ও গ্রুপিং।
বিশেষ করে সরোয়ারের পুনরায় মনোনয়ন প্রত্যাশা ঘিরে এখন বরিশাল বিএনপিতে চলছে অস্বস্তি। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তৃণমূল পর্যায়ে অসংখ্য নেতাকর্মী তার প্রার্থিতা নিয়ে খুশি নন। তাদের অভিযোগ, “দীর্ঘ ষোলো বছর দল যখন দমন-পীড়নের মুখে লড়াই করেছে, তখন তিনি বরিশালে ছিলেন না, ঢাকাতেই সীমাবদ্ধ ছিলেন। দলের দুঃসময়ে পাশে ছিলেন না।”
তৃণমূলের ক্ষোভ:
বরিশাল মহানগর বিএনপির একাধিক তৃণমূল নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,> “আমরা যখন মিছিল-সমাবেশে পুলিশের লাঠিচার্জ, মামলা, জেল-জুলুম সহ্য করেছি—তখন সরোয়ার ভাইকে কোথাও দেখা যায়নি। এখন নির্বাচন এলে তিনি আবার হাজির হয়েছেন মনোনয়নের আশায়। আমরা এবার নতুন নেতৃত্ব চাই, যারা মাঠে থাকে, ত্যাগী কর্মীদের পাশে থাকে।”
আরেকজন নেতা বলেন,> “সরোয়ার ভাই সিনিয়র নেতা ঠিকই, কিন্তু এখন সময় নতুন নেতৃত্বের। তৃণমূলের সঙ্গে যাদের যোগাযোগ নেই, তারা প্রার্থী হলে আসনটি হারানোর ঝুঁকি বেড়ে যাবে।”
দলের ভেতরের গুঞ্জন:
জেলা বিএনপির এক সিনিয়র সদস্য জানান,> “সরোয়ার সাহেবের নেতৃত্বে এক সময় দল শক্তিশালী ছিল, কিন্তু গত এক যুগে তিনি বরিশাল রাজনীতিতে একপ্রকার অনুপস্থিত। তৃণমূল এখন বিভক্ত। অনেকে নতুন প্রার্থী হিসেবে তরুণ, মাঠে সক্রিয় নেতাদের নাম প্রস্তাব করছেন।”
অন্যদিকে সরোয়ার সমর্থকরা বলছেন, তিনি এখনো জনপ্রিয় ও অভিজ্ঞ নেতা, যার উপস্থিতি বিএনপির ভোট ব্যাংককে একত্র করতে পারে। তাদের দাবি,
> “সরোয়ার সাহেবের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা অন্য কারো নেই। তাঁকে বাদ দিলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
দলীয় পর্যবেক্ষণ:
স্থানীয় বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বিভাজন অব্যাহত থাকলে বরিশাল সদর-৫ আসনে বিএনপির সম্ভাবনা ক্ষীণ হতে পারে। যদি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিরসন না করে, তবে আসনটি হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শেষ কথা,এ দিকে শেষবারের মতো দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেছেন এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার। তবে বিএনপি নেতৃত্ব এখনো মনোনয়ন নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি। তৃণমূলের দাবি পরিষ্কার—“যে মাঠে ছিল, তারাই এখন প্রাপ্য।”