বরিশালের প্রিয় মুখ, সাহসী সাংবাদিক আরিফিন তুষারের অকাল প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সংবাদপত্র অঙ্গনসহ সমগ্র সাংবাদিক সমাজে। কিন্তু এই শোকাহত পরিবারের দুঃসময় ভাগ করে নিতে পাশে দাঁড়ালেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর কলেজ এভিনিউতে আরিফিন তুষারের বাসায় গিয়ে তিনি তুষারের বৃদ্ধ বাবা, স্ত্রী ও দেড় বছরের একমাত্র সন্তানের খোঁজখবর নেন। এসময় আবেগঘন পরিবেশে তিনি পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে দেড় বছরের শিশুপুত্রের লেখাপড়া, চিকিৎসা ও সার্বিক সহযোগিতার দায়িত্ব পালনের প্রতিশ্রুতি দেন।
রহমাতুল্লাহ বলেন,
“আরিফিন তুষার ছিলেন একজন সৎ, নির্ভীক ও সাহসী সাংবাদিক। তিনি বারবার আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারের অন্যায় ও অপকর্ম তুলে ধরে সত্যের পক্ষে লড়েছেন। তাঁর বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন ছিল সাংবাদিকতার জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাঁর সাহসী ভূমিকা আমাদের অন্তরে চিরকাল অম্লান হয়ে থাকবে।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন—আরিফিন তুষারের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন ভূঁইয়া, তার স্ত্রী সানজিদা, একমাত্র শিশু সন্তান, সিনিয়র সাংবাদিক আলম রায়হান, বরিশাল প্রেস ক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য কমল সেনগুপ্ত, ক্রীড়া সম্পাদক খান রুবেল, পাঠাগার সম্পাদক কেএম নয়ন, মহানগর বিএনপির সদস্য জাহিদুর রহমান রিপন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা তারিক সুলাইমান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর রোডের নিজ অফিসে দায়িত্ব পালনকালে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত হন আরিফিন তুষার। দ্রুত তাকে শেবাচিম হাসপাতালে নেওয়া হলেও রাত ১০টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৩৮ বছর।
তুষার রেখে গেছেন দেড় বছরের শিশু সন্তান, স্ত্রী, বৃদ্ধ বাবা-মা, দুই ভাইসহ অসংখ্য স্বজন ও অগণিত গুণগ্রাহী। তিনি ছিলেন বরিশাল প্রেস ক্লাবের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক, প্রেস ক্লাব সাংবাদিক কল্যাণ তহবিলের সাধারণ সম্পাদক, বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক ফোরাম বরিশালের নির্বাহী সদস্য এবং জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সম্পাদকীয় পরিষদের সদস্য।
সাংবাদিকতা ছিল তার প্রাণ, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কলম ছিল তার শক্তি। আজ তিনি না থাকলেও তার অমলিন স্মৃতি ও সাহসী ভূমিকা থেকে যাবে সাংবাদিকতার প্রতিটি অঙ্গনে।