1. admin@dailybarishalmukhopatro.com : admin-barishal :
  2. adminaminalamin@gmail.com : বরিশাল মুখপত্র : বরিশাল মুখপত্র
৯ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| শরৎকাল| বৃহস্পতিবার| দুপুর ২:১১|
শিরোনামঃ
দুইদিন থাকবো,বাঘের মত থাকবো; কারো কাছে নাক খদ দিয়ে আসিনি-রায়হান কাওসার দুর্নীতির আতুরঘর চরমোনাই ইউনিয়ন ভূমি অফিস; নিয়ম-দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ, কর্তৃপক্ষ বলছে ‘শুদ্ধি অভিযান চলবে’ ঘুষ কেলেঙ্কারিতে চরমোনাই ইউনিয়ন ভূমি অফিস: তহশিলদার আমির হোসেন মল্লিকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি ও ভুক্তভোগীদের ক্ষোভ বাকেরগঞ্জে পুরুষ নির্যাতনের বিচার চাচ্ছেন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ ছালাম কীর্তনখোলায় লঞ্চের ধাক্কায় নৌকাডুবি, জেলে নিখোঁজ দুর্গাপূজায় বরিশালে র‍্যাবের তিন স্তরের নিরাপত্তা, চলছে সাইবার মনিটরিং নারীর ক্ষমতায়ন ও ঐতিহ্য রক্ষায় বরিশালে আঁকা হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় দেয়ালচিত্র বরিশালে কৃষক হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার বরিশালে ইউএনডিপি’র প্রতিনিধিদল নিয়ে আদালত ঘুরে দেখলেন প্রধান বিচারপতি বরিশালে ফিলিং স্টেশন নির্মাণ, আদালতের নির্দেশে কার্যক্রম স্থগিত

রোগীদের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা: শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মশিউল মুনীরের জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ

✍️ আসাদুজ্জামান মুরাদ ✍
  • প্রকাশিত সময় বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১১৪ বার পড়েছেন

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাছে শুধু চিকিৎসা সেবার অন্যতম ভরসাস্থল নয়, বরং একপ্রকার “জীবন বাঁচানোর শেষ ঠিকানা”। প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী, স্বজন ও সেবাগ্রহীতা এখানে চিকিৎসার আশায় ভিড় জমায়। এত বিশাল জনগোষ্ঠীর চাপ সামলানো, তাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা ও জনকল্যাণমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সহজ নয়। তবুও হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মশিউল মুনীর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি উন্নয়নমূলক ও মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করে চলেছেন, যা রোগী ও স্বজনদের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে।

সর্বশেষ তার উদ্যোগে হাসপাতালের মাঝ গেট সংলগ্ন স্থানে রোগী ও স্বজনদের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে কিংবা দীর্ঘ সময় হাসপাতালে অবস্থানরত সাধারণ মানুষদের জন্য এটি এক মানবিক ও কল্যাণমুখী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা: মানবিক উদ্যোগের অনন্য দৃষ্টান্ত:

হাসপাতালের গেটে প্রবেশ করলেই দেখা যায় দীর্ঘ লাইন, যেখানে রোগী, স্বজন ও পথচারীরা পানির জন্য অপেক্ষা করছেন। পূর্বে এখানে বিশুদ্ধ পানির কোনো নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা না থাকায় মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হতো। অনেক সময় বাইরের দোকান থেকে উচ্চমূল্যে বোতলজাত পানি কিনতে হতো স্বজনদের। কিন্তু শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. মশিউল মুনীর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখেন এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেন।

তার নির্দেশে মাঝ গেট সংলগ্ন স্থানে আধুনিক ফিল্টার মেশিনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানির ট্যাংক স্থাপন করা হয়। এতে ২৪ ঘণ্টা বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যা স্বজন ও রোগী উভয়ের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ হয়ে উঠেছে। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে আসা স্বজনরা বলছেন—এটি সত্যিই এক যুগান্তকারী কাজ, যা প্রতিদিন হাজারো মানুষের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে।

শেবাচিমে পরিচালকের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম :

শুধু পানির ব্যবস্থা নয়, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মশিউল মুনীর হাসপাতালকে একটি আদর্শ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে রূপ দিতে একাধিক উন্নয়নমূলক উদ্যোগ নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে—

হাসপাতালের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধি:
প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা পর্যবেক্ষণ করেন।

ডিজিটাল সেবা প্রবর্তন:
রোগীদের সেবা সহজীকরণের জন্য ডিজিটাল স্লিপ সিস্টেম ও অনলাইন রিপোর্ট সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে রোগীদের অযথা ভোগান্তি ও লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা কমেছে।

অক্সিজেন সরবরাহ ও জরুরি সেবায় উন্নয়ন:
করোনা মহামারির অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে হাসপাতালের অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হয়েছে। জরুরি বিভাগে বাড়ানো হয়েছে অতিরিক্ত বেড ও চিকিৎসক সংখ্যা।

রোগীদের খাবারের মানোন্নয়ন:
হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জন্য সরকারি বরাদ্দকৃত খাবারের পাশাপাশি পুষ্টি নিশ্চিত করতে বিশেষ নজরদারি চালু করেছেন। নিয়মিত মনিটরিং টিম খাবারের মান পরীক্ষা করে।

স্বজনদের জন্য বসার ব্যবস্থা ও ছায়াশীতল স্থান তৈরি:
হাসপাতালে প্রতিদিন কয়েক হাজার স্বজন অবস্থান করেন। তাদের জন্য মাঝ গেট ও অন্যান্য স্থানে ছায়াঘেরা বসার ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে।

সিসিটিভি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার:
হাসপাতালের ভেতর ও বাহিরে আধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এর ফলে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং দালাল চক্র অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।

চিকিৎসক ও নার্সদের সেবামূলক দায়িত্ব জোরদার:
চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নে ডিউটি রোস্টার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। চিকিৎসক ও নার্সদের রোগীর সঙ্গে সদাচরণ করতে বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

রোগী ও স্বজনদের প্রতিক্রিয়া :

শেবাচিম হাসপাতালে আসা রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিচালকের এসব মানবিক ও কল্যাণমূলক উদ্যোগ তাদের ভোগান্তি অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে।

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ থেকে আসা আবদুল মালেক নামের এক রোগীর স্বজন বলেন—

“আগে আমরা হাসপাতালে এসে বিশুদ্ধ পানি পেতাম না। গরমে খুব কষ্ট হতো। এখন মাঝ গেটে ২৪ ঘণ্টা বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা থাকায় আমাদের আর বোতল কিনতে হয় না। পরিচালক স্যারের এ কাজটা সত্যিই প্রশংসনীয়।”

অন্যদিকে, গৌরনদী থেকে আসা রোজিনা বেগম বলেন—
“আমার ছেলেকে ভর্তি করেছি। আমি সারাদিন হাসপাতালে থাকি। আগে খাবার ও পানি নিয়ে চিন্তায় থাকতাম। এখন অন্তত পানি নিয়ে কষ্ট করতে হয় না। আল্লাহ পরিচালক স্যারকে উত্তম প্রতিদান দিন।”

হাসপাতালের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে এসব উদ্যোগ:
দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় এই সরকারি হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে দীর্ঘদিন অভিযোগ ছিল সাধারণ মানুষের। অব্যবস্থাপনা, দালাল চক্র, বিশৃঙ্খলা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রোগীরা নানান ভোগান্তিতে পড়তেন। কিন্তু বর্তমান পরিচালকের উন্নয়নমূলক উদ্যোগের কারণে ধীরে ধীরে হাসপাতালের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে।

জনগণের কাছে এ বার্তা পৌঁছেছে যে—“সরকারি হাসপাতাল মানেই অবহেলা নয়, ইচ্ছা থাকলে এখানেও উন্নতমানের সেবা পাওয়া সম্ভব।”

সামনে আরও উন্নয়নের পরিকল্পনা:
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মশিউল মুনীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে সাংবাদিকদের জানান—
“এই হাসপাতালকে রোগীবান্ধব, পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে রূপ দেওয়াই আমার মূল লক্ষ্য। পর্যায়ক্রমে রোগীদের জন্য আরও নতুন নতুন সেবা চালু করা হবে।”

তার পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে—
প্রতিটি ওয়ার্ডে আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা, সোলার সিস্টেমে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, রোগীদের দ্রুত সেবা পেতে ডিজিটাল হেল্প ডেস্ক ইত্যাদি।

স্বজনদের জন্য আরও বিশ্রামাগার নির্মাণ।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মশিউল মুনীরের সাম্প্রতিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম শুধু রোগী ও স্বজনদের ভোগান্তি কমায়নি, বরং সরকারি স্বাস্থ্যসেবার প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে এনেছে। মাঝ গেটে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা তার মানবিক মনোভাবের উজ্জ্বল উদাহরণ।

জনগণের প্রত্যাশা—এ ধরনের কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত থাকবে এবং একদিন শেবাচিম হাসপাতাল সত্যিকার অর্থে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য একটি আদর্শ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হয়ে উঠবে।

নিউজটি ফেসবুকে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2025 dailybarishalmukhopatro.com
EngineerBD-Jowfhowo