বরিশাল নগরীর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা মোড়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন কারিগরি শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে অংশ নেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে ডিগ্রি প্রকৌশলীদের অযৌক্তিক তিন দফা দাবি বিবেচনায় নেওয়া হলেও তাদের ন্যায্য দাবিগুলো উপেক্ষিত হচ্ছে।
শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার পায়েল বলেন,
“আমাদের এই আন্দোলন বেঁচে থাকার লড়াই। দাবি পূরণ না হলে আমরা ক্লাসে ফিরব না।”
শিক্ষার্থী রাশেদ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,
“প্রশাসনকে সময় দেওয়া হয়েছে, কিন্তু দাবি বাস্তবায়ন না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুল আলম মিঠু বলেন,
“ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এর দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে। আমাদের সাত দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
অন্য শিক্ষার্থীরা জানান, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এই আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।
শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবি
১. প্রকৌশল কর্মক্ষেত্র ডেস্ক ও ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বিভাজন করে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ডেস্ক ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ফিল্ডে নিয়োগ, এবং সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদ সংরক্ষণ।
২. একমুখী প্রকৌশল শিক্ষাব্যবস্থা চালু, প্রকৌশলীদের পেশা পরিবর্তন রোধ ও প্রশাসনিক পদে প্রশাসনিক ক্যাডার নিয়োগ বন্ধ।
৩. উপ-সহকারী প্রকৌশলী থেকে প্রকৌশলীতে পদোন্নতি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত করা।
৪. আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী প্রকৌশল সংস্থায় জনবল কাঠামোতে বিএসসি, ডিপ্লোমা ও দক্ষ জনবলের অনুপাত ১:৫:২০ নির্ধারণ।
৫. পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউটে শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ ও যুগোপযোগী কারিকুলাম বাস্তবায়ন।
৬. ডিপ্লোমা সম্পন্নকারীদের জন্য ক্রেডিট ট্রান্সফার আইনে উচ্চশিক্ষার সুযোগ এবং পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ নিশ্চিত।
৭. কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের পূর্বে উত্থাপিত ৬ দফা দাবি অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন।
👉 শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি মানা হলে কেবল ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা নয়; সমগ্র প্রকৌশল খাত উপকৃত হবে।